গোয়া (Goa) : গোয়া ভারতের এমনই একটি ভ্রমণ গন্তব্য, যেখানে বোধ হয় সকলেই যেতে চায়। এই প্রসঙ্গেই বলা যায়, গোয়াকে কোনও বিনোদনের জায়গা বললে ভুল হবে না। এখানকার পরিবেশ, গোয়ান ক্লাবগুলিতে দারুণ বিনোদনমূলক আবহ এবং রাতের জীবন দেখে যে কেউ বার বার গোয়া ভ্রমণ করতে চাইবেন। যাই হোক আপনি যদি এখনও গোয়া না গিয়ে থাকেন, তা হলে আপনাকে অবশ্যই সেখানে এক বার হলেও ঘুরতে যেতে হবে।
বিষয় সূচী
Toggleকলকাতা থেকে গোয়া যাওয়ার সবথেকে সহজ উপায় হলো ট্রেনে যাওয়া । এতে সময় বেশী লাগলেও আপনার বাজেট অনেকটাই কমবে । কলকাতা থেকে অমরাবতী এক্সপ্রেসে প্রায় তিন দিন সময় লাগে গোয়া পৌছাতে ।
এছাড়াও আপনি আকাশ পথে ও সফর করতে পারেন।
এর জন্য প্রথমে কলকাতা থেকে বিমানে মুম্বাই বা ব্যাঙ্গালোর নেমে তারপর সেখান থেকে ট্রেনে গোয়া যেতে পারেন।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে এবং প্রকৃতির সঙ্গী কিছু স্বাচ্ছন্দ্যময় মুহুর্তগুলিতে আগ্রহী হলে আগাওদা আপনার জন্য সৈকত। এটি এই সৈকতে অবস্থিত ফোর্ট আগাওড়ার এক ঝলকের সাথে তুলনামূলকভাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পরিবেশ সরবরাহ করে।
যদি নির্জনতা এবং গোপনীয়তা আপনি চান না তবে গোয়ার মান্দ্রেম সমুদ্র সৈকতটি আপনার দিকে যাওয়া উচিত। এখানে সীমিত সুযোগসুবিধা রয়েছে এবং কোনও জলের খেলাধুলা নেই, তবে হানিমুনি এবং বিদেশি যারা প্রকৃতির সংসারে সময় কাটাতে আগ্রহী তাদের জন্য এটি একটি নিখুঁত পলাতক।
অঞ্জনা সৈকত আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এটি গোয়ার রাজধানী পানজি থেকে মাত্র ১৮ কিমি দূরে অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এবং এখানে আয়োজন করা মাছি বাজারের জন্য বিখ্যাত। এই সৈকতে গৌরবময় আলবুকার্ক ম্যানশনও রয়েছে। অঞ্জনা সৈকতকে বিশ্বের ফ্রিক্যাল রাজধানী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয় এবং এর ট্রান্স পার্টি এবং হিপ্পিজের জন্য বিখ্যাত।
কোলভা সমুদ্র সৈকত দক্ষিণ গোয়ার কোলভা গ্রামের কাছাকাছি। এটি একটি বিস্তৃত সৈকত যা বাচ্চাদের পরিবারগুলির জন্য ছুটির জন্য আদর্শ। আরব সাগর বরাবর এই সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মানুষকে আকর্ষণ করে।
আপনি যদি একটি ছিটকে পড়া লাইফস্টাইল সহ একটি সুন্দর সৈকত খুঁজছেন, ক্লিয়ারিয়ানটি যেখানে আপনার উচিত। এটি গোয়ার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং আপনি জলেতে মজা করতে পারেন এবং বিরক্ত না হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের নীচে স্নান করতে পারেন।
গোয়াতে প্রচুর আকর্ষণ রয়েছে এবং এর বাজারগুলি পর্যটকদের জন্য দুর্দান্ত আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। একটি বাজারের উল্লেখযোগ্য হ’ল ফ্লাই মার্কেট যা প্রতি বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি অনুষ্ঠিত হয়। বাজারটি বিশাল, এবং এখানে ৫০০ টিরও বেশি শপ রয়েছে পোশাক থেকে উপহার এবং স্যুভেনির পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের পণ্য পর্যটকরা একে অপরের সাথে ঝাঁকুনি দেয় এবং এখানে খুব সস্তার দামে উপহার পেতে দর কষাকষি করে। এর বাইরে শনিবার নাইট মার্কেট এবং ম্যাকির মার্কেটও রয়েছে। আপনি কেবল দর কষাকষি করার পণ্যগুলি পেতে আশা করতে পারবেন না তবে এখানে সরাসরি সংগীত এবং সুস্বাদু খাবারের আকারে কিছু দুর্দান্ত বিনোদন পাবেন।
আগুয়াদা দুর্গ একটি পর্তুগিজ দুর্গ। সপ্তদশ শতকে দুর্গটি নির্মিত হয়েছিলো। মানদোভি নদী ও আরব সাগরের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এই দুর্গ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় একটি জায়গা। পর্যটকরা এখানে এসে মুগ্ধ হয়।
থালাসায় অবস্থিত দ্য গ্রিক তাভার্না গোয়ার বিখ্যাত রেস্তোরাঁগুলোর অন্যতম। পর্যটকদের কাছে এটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় জায়গা। সূর্যাস্তের সময় এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত হলো দুধসাগর জলপ্রপাত। মোলেম ন্যাশনাল পার্কের ভেতর এই জলপ্রপাত অবস্থিত। বর্ষার সময়ে জলপ্রপাতটি অবিরাম ঝরতে থাকে। এখানে সবসময় পর্যটকদের ভীড় লেগেই থাকে।
গোয়ায় অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত একটি দ্বীপ হলো দিভার দ্বীপ। এখানে শত শত পর্যটক ছুটে আসেন এই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য। দ্বীপটিতে পর্তুগিজ স্থাপত্যের নিদর্শন ও পুরানো গীর্জা রয়েছে।
বলাইবাহুল্য সমুদ্রের ধারের রাজ্য গোয়া, মাছের এখানে কোন কমতি নেই। বেশিরভাগই সামুদ্রিক মাছ, পমফ্রেট, চিংড়ি। রান্নায়, বিশেষত কোঙ্কণী রান্নায়, বাঙ্গালীদের মতনই নারকেলের দুধ দিয়ে ভালোবাসা উদযাপন। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে পর্তুগীজদের প্রভাব। টাটকা শুয়োরের মাংস দিয়ে কষিয়ে রান্না করা হয় ভিন্দালু। খাওয়া হয় গরম ভাত দিয়ে মেখে। প্রতিটি তরকারিতে কিছুটা টক ভাব। এই টক স্বাদের উৎস কিন্তু কোকুম ফল। সোল কাড়ি, কোকুম দিয়ে তৈরি একটি পানীয়। আর হ্যাঁ, আপনি যদি বাঙালি রান্নার খোঁজ করছেন, নিরাশ হবেন না। প্রত্যেকটি বড় সমুদ্র সৈকতে বাঙ্গালীদের জন্য বিশেষ “মিল সিস্টেম” চালু আছে। কাতলা থেকে পাবদা সব রকমের নদীর মাছ সেখানে পরিবেশিত হয়। তবে হ্যাঁ মিষ্টি পাওয়া যাবে না। মিষ্টির জন্য আপনাকে গুড় ও নারকেল দিয়ে তৈরি বিবিন্কা কেকের ওপরেই নির্ভর করতে হবে।
গোয়ার বেশ কিছু বীচ ঘিরে গড়ে উঠেছে হোটেল – মোটেল জোন । মিরামার, বাঘা , কোলবা , পানজিম ইত্যাদি বীচ এরিয়ায় হোটেলের অভাব নেই । এসব হোটেলে থাকার খরচ মাথাপিছু 500 টাকা থেকে শুরু করে 5000 টাকা পর্যন্ত হয় । এছাড়াও এখানে গোয়া টুরিজমের বেশ কিছু সরকারি হোটেল রয়েছে । আপনি চাইলে সেখানে ও থাকতে পারেন
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী অমিত এখন বেসরকারী চাকুরীরত । পড়াশোনার পাশাপাশি লেখাটাও তার একটা নেশার মধ্যে পরে ।